সুবর্ণলতার সাহিত্য সমালোচনা

সুবর্ণলতা তোমার জন্য একরাশ নরম ফুলের আদর রইল।
তোমার মূল্য এ সমাজের কলুষিত মননের মানুষেরা বোঝেনি,বুঝবেও না। 
শুধু প্রবোধ,মুক্তকেশীর মতো মানুষেরা অত্যাচার করে নিজেদের পাশবিকতা তুলে ধরবে বারবার দৈনন্দিন জীবনে হোক বা সাহিত্যের কোণায় কোণায়। 
খুঁজলে দেখা যাবে আজও কত সুবর্ণলতা হারিয়ে গেছে প্রবোধ এর মতো অমানবিক সন্দেহবাতিক পুরুষের লালসায়, নিজেদের পবিত্রতা ঘোষণা করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলে রেখে গেছে একরাশ প্রশ্ন সমাজের তথাকথিত প্রধান বা মুখ্য মাথা বা বুদ্ধিজীবী দের প্রতি, ভবিষ্যতেও রেখে যাবে এবং আজও যাচ্ছে। 

মুক্তকেশীর মতো মানুষেরা শুধুমাত্র পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতিনিধি হয়ে মেয়েদের সর্বনাশ করেই যাবে তথাকথিত নিয়মের চোখরাঙানিতে। 

তবুও সত্যবতীর মতো মেয়েরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ছিনিয়ে নেবে সংসারের বেড়াজাল ছিঁড়ে বেরিয়ে এক মুঠো খোলা বাতাস। 
বিশ্বাসঘাতকতার চরম শাস্তি হিসেবে দিয়ে যাবে নিদারুণ অভিমানের ঢেউ,বিচ্ছেদের গোধূলি দিয়ে চলে যাবে উপেক্ষা করে পুরুষদের চোখরাঙানিকে অগ্রাহ্য করে। 
অপরদিকে সুবর্ণলতার মতো মেয়েরা হাজারও চোখ রঙানি, কটুক্তি, মারধর অগ্রাহ্য করে বারবার প্রতিবাদে মুখর হবে,অবহেলায় মুখ ফিরিয়ে মৃত্যুশয্যায় ঢলে পড়ে গেলেও সেই জেদ, উপেক্ষা রেখে যাবে শেষ নিঃশ্বাসেও।রেখে যাবে ঠাকুমাদের মতো কত মানুষের ষড়যন্ত্রে কত মায়ের স্বপ্ন মেয়েকে শিক্ষিত ও স্বর্নিভর - এর স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে একটা ছোট্ট ফুলের মতো মেয়ের জীবনটা কেমন বীভৎস হয়ে উঠতে পারে তা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাবে প্রতিটি মুহুর্তে। 
বুঝিয়ে দিয়ে যাবে বয়স না হতেই খেলনাবাটি ছিনিয়ে ঘরকন্নার চাবি তুলে দিলে তার মোমের মতো মনের অবস্থা কতখানি ব্যথার বিষে নীল হতে পারে। 
বলে চলে যেতে পারে সে একদিন কি পরিমাণ অভিমান হলে একটুখানি আশ্রয় না পেলে আমাকে রেখে এসো সেই জেলখানায়, শুধু শুধু ক্ষণিকের যত্নআত্তি দিয়ে কি সেই বছরের পর বছর মারের দাগ, অত্যাচারের স্মৃতি মুছে ধুয়ে ভুলিয়ে দিতে পারবে মানসিক ক্ষতের স্তরের গভীরতা। অথচ তার মায়ের রক্তে বয়েছিল রামকালীর মতো তেজস্বী উদার মুক্ত বাতাসের মতো মানুষের  
ছোঁয়া।তার রক্তের  একফোঁটা বিন্দুও কি তার শরীরের ছিল না যার দরুণ সেও সত্যবতীর মতো প্রতিবাদের ঝড় তুলে জানিয়ে দিতে পারত অন্যায়ের মশালও নেভানো যায় কটু কথা ও অকথ্য অত্যাচার না করেও দাবানল জ্বালানো যায়। অথচ সে তার পূর্বের আত্মীয়া 
মোক্ষদা( পিসিঠাকুমা) 
ভুবনেশ্বরী( ঠাকুমা)   
কাশীশ্বরীদের মতো অন্তরালে কঠিন ব্রত পালন করেই অমানুষিক পরিশ্রমের জাঁতাকলে পিষে হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাই না!
অথচ কেবলমাত্র পাঠকদের কাছে  প্রশ্নের পাহাড় ছুঁড়ে দিয়ে চলে গেলো নীরব অভিমানে সেজে। 
©মেহুল শুনি🌸

Comments

Popular posts from this blog

অন্ত্যমিলে মুগ্ধতা

শিশিরেভেজা ঘাসে সরষে ফুল ফোটে🌸💌